মু: মাহবুবুর রহমান
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি কাউন্টিতে আগুনে পুড়তে থাকা বাড়ির জানালা দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে নিজের বোনকে রক্ষা করেছে সাত বছরের এক শিশু। ঐ শিশুটির সাহসিকতার গল্প এখন মানুষের মুখে মুখে।
সম্প্রতি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম কে এলি নামের ঐ শিশুটি বলেছে, “আমি চাইনি যে আমার বোনটি মারা যাক (didn’t want my sister to die)।“
ঐ দিনের ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানায়, এই ডিসেম্বরের ৮ তারিখ রাতে ডিনারের পর ক্রিস এবং নিকোলে ডেভিডসন তাদের তিন সন্তানকে ঘুম পাড়িয়ে নিজেদের রুমে চলে যান।
কয়েক ঘণ্টা পর নিকোলে, আগুনের পোড়া গন্ধ পেয়ে ঘুম থেকে জেগে ওঠেন। ততক্ষণে চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে আগুন।
নিকোলে জানান, তিনি ও তার স্বামী ক্রিস তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে বের হতে পারলেও ঘরে আটকে পড়ে তাদের ২২ মাস বয়সী শিশুসন্তান এরিন। শিশুশয্যার আলাদা জায়গায় এরিনকে রাখা হয়েছিল। রুমটির চারদিকে দ্রুতই আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
নিকোলে বলেন, “ওটা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর মুহূর্ত, আমরা বাহিরে দাঁড়িয়ে দেখছিলাম যে আমার মেয়ে শিশুটি এখনো ঘরের মধ্যে আটক পড়ে আছে।“
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নিকোলে আরো বলেন, “আমরা এরিনের কাছে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছিলাম না। ওকে জানালা দিয়ে বের করার চেষ্টায় ছিলাম সবাই। মনে হচ্ছিল কিছুই করতে পারবো না। আর তখোনি জানালা দিয়ে এলি ঘরে ঢুকে যায়। ওই অবস্থায় সে তার বোন এরিনকে বের করে আনে।“
তিনি আরো বলেন, “ও চোখের পলকে যা করেছে, আমরা বড়রাও তা করতে পারতাম না। এর চেয়ে গর্ব আর হয় না।“
ক্রিস সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, এরপর দমকলকর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে ঠিকই। কিন্তু সকাল পর্যন্ত ঘরের কিছুই অবশিষ্ট ছিল না। তবে আমরা পাঁচজনই সুস্থ আছি।
এলি এখনো সেই ভয়াবহ রাতের কথা স্মরণ করে কেঁপে ওঠে, “ভেবেছিলাম পারবো না। ভয় পাচ্ছিলাম খুব। তবু আমার বোনকে আমি মরতে দিতে চাইনি।“
সাত বছরের এলি সংবাদ মাধ্যমকে জানান, “ওটা অবশ্যই ভয়ের কাজ ছিল এবং আমিও ভয় পেয়েছিলাম। কিন্তু আপনি যদি সাহসী হন এবং আপনি যদি চান এটা আপনি করবেন তাহলে আপনি অবশ্যই তা করতে পারবেন।“