মু: মাহবুবুর রহমান
বাংলাদেশে জরুরি ভিত্তিতে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউটে তৈরি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকা আবিষ্কৃত টিকা ‘কোভিশিল্ড’ প্রয়োগের অনুমোদন দিয়েছে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে গতকাল বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারী ২০২১) বিকেলে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় সংস্থাটি। এর আগে গত ৪ জানুয়ারি টিকাটি আমদানির এনওসি (অনাপত্তিপত্র) দেয় ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর।
ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সালাউদ্দিন সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, “অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত ভ্যাকসিন, যেটা সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদন করছে সেটার ইমার্জেন্সি ইউজ অব অথরাইজেশন দেয়া হলো ৭ জানুয়ারি। এতে এই টিকা দেশে এনে ব্যবহারের আর কোনো বাঁধা রইলো না।“ তিনি আরো বলেন, “যুক্তরাজ্যের মেডিসিনস অ্যান্ড হেলথ কেয়ার প্রোডাক্ট রেগুলেটরি এজেন্সি (এমএইচআরএ) জরুরি ব্যবহারের জন্য এই ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেয়ায়, আমরাও অনুমোদন দিতে পেরেছি।”
এর আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ১৪ সদস্যের বিশেষজ্ঞ কমিটি অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার উদ্ভাবিত ভ্যাকসিনটি জরুরি অনুমোদনের জন্য সুপারিশ করে।
অক্সফোর্ডের টিকা উৎপাদন ও বিপণনের দায়িত্বে রয়েছে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট। আর বাংলাদেশে এই টিকা আনতে সিরামের সঙ্গে চুক্তি করেছে বাংলাদেশ সরকার ও ওষুধ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশকে তিন কোটি ডোজ টিকা দেবে সিরাম ইনস্টিটিউট এবং প্রতি মাসে টিকার ৫০ লাখ ডোজ পাওয়ার কথা বাংলাদেশের।
ওই তিন কোটি ডোজ টিকার জন্য অগ্রিম হিসেবে ৬০০ কোটি টাকা পাঠানোর প্রক্রিয়াও ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক । স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, ভারত থেকে নির্ধারিত সময়েই বাংলাদেশ করোনার টিকা পাবে।
বাংলাদেশে সিরাম ইনস্টিটিউটে উৎপাদিত ভ্যাকসিনের ‘এক্সক্লুসিভ ডিস্ট্রিবিউটর’ বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস জানিয়েছে, চুক্তি অনুযায়ী বাংলাদেশে এই টিকা অনুমোদন পাওয়ার এক মাসের মধ্যে সিরাম ইনস্টিটিউটের টিকার প্রথম চালান পাঠানোর কথা।
এদিকে ৭ জানুয়ারী জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দ্রুত করোনার টিকা আনার সব ধরনের চেষ্টা চালাচ্ছে সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “মহান আল্লাহর অশেষ রহমতে বাংলাদেশে এখনো সংক্রমণ এবং মৃত্যুহার অনেক কম। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাচ্ছি এই মহামারি নিয়ন্ত্রণে রাখার। আশার কথা, বিভিন্ন দেশে কোভিড-১৯-এর টিকা প্রদান শুরু হয়েছে। বাংলাদেশেও আমরা দ্রুত টিকা নিয়ে আসার সব ধরনের চেষ্টা করছি। টিকা আসার পরপরই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যসহ সম্মুখসারির যোদ্ধাদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে টিকা প্রদান করা হবে।“