১৯৮১ সালের ১ জুন পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে জেনারেল মঞ্জুরকে গুলি করে হত্যা মামলার আসামী তিনজনকে অভিযুক্ত করে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। একইসঙ্গে মৃত্যুবরণকারী সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ও মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল লতিফের অব্যাহতির আবেদন করা হয়েছে।
অভিযোগপত্রের গ্রহণযোগ্যতার বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য রয়েছে আগামী ২৫ জানুয়ারি। মামলার সম্পূরক অভিযোগপত্রে অভিযুক্ত আসামিরা হলেন- মেজর (অব.) কাজী এমদাদুল হক, লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোস্তফা কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া ও লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) শামসুর রহমান শামস।
ঢাকার প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক দিলারা আলো চন্দনার আদালতের এ সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার কুতুবুর রহমান। শুক্রবার (১৫ জানুয়ারি) সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী নুর মোহাম্মদ খান বিষয়টি জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক সেনা অভ্যুত্থানে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান নিহত হন। তখন চট্টগ্রামে অবস্থিত সেনাবাহিনীর ২৪তম পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার স্টাফ (জিওসি) ছিলেন মোহাম্মদ আবুল মঞ্জুর। জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর আত্মগোপনে যাওয়ার পথে তাঁকে পুলিশ আটক করে। এরপর ২ জুন মেজর জেনারেল মঞ্জুরকে হাটহাজারী থানার পুলিশ হেফাজত থেকে চট্টগ্রাম সেনানিবাসে নিয়ে গুলি করে হত্যা করা হয়।
ঘটনার ১৪ বছর পর ১৯৯৫ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি মঞ্জুরের ভাই আইনজীবী আবুল মনসুর আহমেদ চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ থানায় মামলা করেন। এতে অভিযোগ করা হয়, জেনারেল মঞ্জুরকে পুলিশের কাছ থেকে মেজর কাজী এমদাদুল হক সেনা হেফাজতে নেন। পরে তাঁকে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়।
১৯৯৫ সালের ২৭ জুন এরশাদসহ পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি। অভিযোগপত্রভুক্ত অপর চারজন ছিলেন মেজর জেনারেল (অব.) আবদুল লতিফ (ডিজিএফআইয়ের সাবেক প্রধান), মেজর কাজী এমদাদুল হক, লে. কর্নেল শামসুর রহমান শামস ও লে. কর্নেল মোস্তফা কামাল উদ্দিন।
এ ছাড়া তদন্তে ব্রিগেডিয়ার এ কে এম আজিজুল ইসলাম ও নায়েক সুবেদার আবদুল মালেকের বিরুদ্ধেও হত্যায় জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায়। এ কে এম আজিজুল ইসলাম ১৯৯২ সালে ও আবদুল মালেক ১৯৯১ সালে মারা যান। তাই তাঁদের আসামি করা হয়নি। অভিযোগপত্রে বলা হয়, এরশাদের নির্দেশে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মঞ্জুরকে হত্যা করে এবং লাশ গোপন করার চেষ্টা করেন।