মু: মাহবুবুর রহমান
দুর্যোগ যেন পিছু ছাড়ছে না দ্বীপ রাষ্ট্র ইন্দোনেশিয়ার। প্লেন দূর্ঘটনা আর ভূমিকম্পের পর এবার দেশটির আগ্নেয়গিরি মাউন্ট সেমেরু হঠাৎ করেই জেগে উঠেছে। স্থানীয় সময় শনিবার (১৬ জানুয়ারি) ১৭টা ২৪ মিনিটে মাউন্ট সেমেরুর জ্বালামুখ দিয়ে ধোঁয়া বের হওয়া শুরু হয় বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম।
আগ্নেয়গিরি সেমেরু থেকে নির্গত ছাই আর ধোঁয়ায় আকাশ ছেয়ে গেছে, অন্ধকার নেমে এসেছে আশপাশের এলাকায়। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, আকাশে প্রায় ৫ দশমিক ৬ কিলোমিটার উচ্চতা পর্যন্ত উঠে যায় আগ্নেয়গিরির ধোঁয়া। ঘনবসতি এলাকার আগ্নেয়গিরিটি জেগে ওঠায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে স্থানীয়দের মাঝে।
আগ্নেয়গিরি জেগে উঠার পর এখনো পর্যন্ত কোনো মৃত্যুর খবর মেলেনি। তবে কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের সতর্ক করে বলেছে, অগ্ন্যুৎপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি নেমে আসতে পারে লাভাস্রোতও। তবে প্রশাসন থেকে এখন পর্যন্ত স্থানীয়দের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার কোনও নির্দেশ জারি করা হয়নি বলে জানিয়েছে বিবিসি। বরং দেশটির ‘ন্যাশনাল ডিজাস্টার মিটিগেশন এজেন্সি’ (এনডিএমএ) থেকে পাহাড়ের পাদদেশে থাকা গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের সম্ভাব্য ‘কোল্ড লাভা’ কাদা প্রবাহের দিকে নজর রাখার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া নানা ছবিতে ১২ হাজার ৬০ ফুট উঁচু সেমেরু পাহাড়ের জ্বালামুখ থেকে বেরিয়ে আসা ছাইয়ে বাড়ি ঘর ঢেকে যেতে দেখা যায়।
পাহাড় সেমেরু ‘দ্য গ্রেট মাউন্টেইন’ নামেও পরিচিত। এটি জাভা দ্বীপের সর্বোচ্চ এবং সবচেয়ে বেশি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। পাহাড়টি ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্রগুলোরও একটি। সারা বিশ্ব থেকে প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ এই পাহাড়ে বেড়াতে যান।
এর আগে গত ডিসেম্বরে মাউন্ট সেমেরু থেকে উদগিরণ হয়েছিল। সেবার প্রায় স্থানীয় সাড়ে পাঁচশ বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছিল।
তারও আগে ইন্দোনেশিয়ায় সুমাত্রা দ্বীপের আগ্নেয়গিরি মাউন্ট সিনাবাং জেগে ওঠে ২০১০ সালে। তবে আগ্নেয়গিরি মাউন্ট সিনাবাং এর সবচেয়ে ভয়ংকর রূপ দেখা যায় ২০১৬ সালে। ২০২০ সালের আগস্টেও এটি জেগে উঠেছিলো।
ইন্দোনেশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ‘রিং অব ফায়ার’ এ অবস্থিত। যে কারণে দেশটিতে মাঝেমধ্যেই নানা সক্রিয় আগ্নেয়গিরি জেগে উঠে। এছাড়া দেশটি বেশ ভূমিকম্প প্রবণ।