সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্যোগে বিশ্বে এ বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি ‘আন্তর্জাতিক মানব ভ্রাতৃত্ব দিবস’ পালিত হচ্ছে। ২০১৯ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি আবুধাবিতে মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের শাইখ ও ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সিস বিশ্ব শান্তি ও সহাবস্থানের জন্য মানব ভ্রাতৃত্বের নথিতে স্বাক্ষর করেন।
আল-আজহারের শাইখ ও ভ্যাটিকানের পোপের স্বাক্ষরযুক্ত ওই নথিকে স্মরণীয় করে রাখতে দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক মানব ভ্রাতৃত্ব দিবস’ হিসেবে পালনের অনুমতি দেয় জাতিসংঘ।
সাধারণ পরিষদ ২০১৯-এর ২১ ডিসেম্বর এ দিবস পালনের অনুমোদন দেয়। সে হিসাবে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারির ৪ তারিখ থেকে পুরো বিশ্ব এই দিনটিকে ‘আন্তর্জাতিক ভ্রাতৃত্ব দিবস’ হিসেবে উদযাপন করবে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, মিসর ও সৌদি আরব এই উদ্যোগের সূচনা করলেও এখন তা পালন করবে সারাবিশ্ব।
রেজুলেশন গৃহীত হওয়ার আগে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি লানা জাকি নুসাইবেহ বলেন, ‘সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বে সহিংসতা, ঘৃণ্য বক্তব্য, ইসলামোফোবিয়া, ধর্মীয় গোঁড়ামি ও বৈষম্য নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ ধরনের হুমকির মুখে আমাদের এমন উদ্যোগকে সমর্থন করতে হবে, যা মানব ভ্রাতৃত্বের চেতনায় মানুষের মধ্যে সংহতি ও ঐক্যকে উত্সাহিত করে। আরব আমিরাত, সৌদি আরব, বাহরাইন ও মিসর এই উদ্যোগের মাধ্যমে অন্যান্য ধর্মের মানুষের প্রতি আমাদের সহানুভূতি ও ভালোবাসার মূল্যবোধকে প্রমাণ করেছে।’
আয়োজক কমিটির (এইচসিএইচএফ) সেক্রেটারি জেনারেল ও বিচারক মুহাম্মদ আবদুস সালাম ৪ ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মানব ভ্রাতৃত্ব দিবস হিসেবে জাতিসংঘের প্রস্তাব গৃহীত করাকে এইচসিএইচএফের বড় অর্জন হিসেবে মনে করেন।
পাশাপাশি বিশ্ব শান্তি ও সহাবস্থানের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ঐতিহাসিক দলিল হিসেবেও এ দিবসটি বিবেচিত হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। জাতিসংঘের প্রস্তাবনা অনুযায়ী ধর্মীয় বিদ্বেষকে সমর্থন করে ও সহনশীলতার মনোভাবকে ক্ষুণ্ণ করে- এমন সব কাজের জন্য গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে।
বিশেষত করোনা মহামারীতে বিধ্বস্ত ও সংকটের মুখোমুখি বিশ্বে এই ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত হওয়া অন্য যে কোনো সময়ের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমবারের মতো আন্তর্জাতিক মানব ভ্রাতৃত্ব দিবস উদযাপন গভীর অর্থবহ। এর প্রধানতম উদ্দেশ্য হলো– আন্তর্জাতিক সহিষ্ণুতা গড়ে তোলা ও শান্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়া। ধর্মান্ধতা, সহিংসতা, বিদ্বেষ ও ঘৃণাসূচক বক্তব্য পরিহার করে বিশ্বের সব মানুষকে একটি মুক্ত পরিবেশের দিকে আহ্বান করা।