অভিমত জীবনধারা নারী

কঠোর মায়ের শাসনে বেড়ে উঠা সন্তানের ভবিষ্যত

মাসুমা ইসলাম নদী
বাবা ও মায়ের মধ্যে বাচ্চারা কাকে বেশি কেয়ার করে ?
কার কথা সবচেয়ে বেশি শুনে থাকে ?
এ সমস্ত কথা গুলো আমরা প্রায়ই এখনকার দিনে শুনি ।।।
ভাবী আমার বাচ্চা আমার কথা শুনে না !!!
ওরা বাবাকে ভয় পায়। আমি কিছুতেই শাসন করতে পারি না ,,, অন্যদিক রাগী মায়েদের এধরনের অভিযোগ নেই একেবারেই ।
 
তাহলে মা যদি বন্ধু না হয় তাহলে বাচ্চার ভবিষ্যত কি হবে যে কোন সময়ই তো খারাপ বন্ধুদের সাথে মিশে বখে যেতে পারে ?? হূম প্রশ্নটা আমারও মাথায় চলে আসে। শিখে নিশ্চয়ই মা-বাবার কাছ থেকে। মা-বাবাই হলেন প্রথম শিক্ষক। এরপর শিশু স্কুলে যায়। প্রাথমিক শিক্ষা দেয় কিন্তু মা-বাবা। মা-বাবা কী শেখাচ্ছেন, তার ওপর নির্ভর করে তৈরি হয় শিশুর ব্যক্তিত্ব। মৌলিক শিক্ষাগুলো মায়ের কাছ থেকেই পাচ্ছে সবাই। মানসিকতা তৈরি হওয়ার প্রথম কর্ণধার হলেন মা।
 
সমীক্ষায় জানা যায় রাগী মায়েদের সন্তান সব সময়ই সমাজের উচ্চ স্থানে অবস্থান করে, কারন যে সব মায়েরা তার বাচ্চাদের লালন পালনে নিজের ভূমিকা একজন শিক্ষক ও একজন মেন্টর হিসেবে পদার্পন করে তাদের বাচ্চারা বেশির ভাগই উচ্চ শিক্ষিত ও মার্জিত সফলতার ধাপ সহজে পেরিয়ে যেতে পারে ।
 
তাহলে কি সন্তানের কেউ বন্ধু হবে না ? বাবা ও মায়েদের মধ্যে !!
 
এখানে সুন্দর একটা উত্তর লুকানো, তখন সন্তানের সাথে সখ্যতা ও বন্ধুত্ব বাড়ানোর উপায় থাকে তার বাবা । সংসারে খেয়াল করে দেখবেন বাবা সব সময়ই বাহিরে থাকে, তারা সারাদিন সময় পায়না পরিবারের জন্য টাকা উপার্জন করে, বাচ্চাদের নিয়ে বসে সন্ধ্যায় অভিযোগের খাতাটা খুলে দেখার অথবা দেখলেও তার যে ভালবাসা থাকে বাচ্চাদের নিয়ে তখন শাসনে সেটা মিশলে হিতে বিপরীত হতে পারে। কারন তখন বাড়ন্ত বাচ্চাগুলো ভূল বুঝতে পারে, তারা মনে করতে পারে তাদের বাবা তাদের আদর করে না ।
আমি বলব পরিবারে ছোট খাট বিষয় গুলো তাদের বাচ্চাদের ব্যাপারে তার মাকেই খেয়াল করা উচিত । তা নাহলে ভবিষ্যত প্রজন্মে কত ধরনের দুর্ভোগ সৃষ্টি হতে পারে তার নমুনা সাম্প্রতিক সময়ে দেখেছি । যে বাচ্চারা মায়ের সাথে বন্ধুত্ব করে নেয় তাদের ভূল করার সম্ভবনা অনেক বেশি কারন ছোট খাট বিষয়ে মাকে পাত্তা দেয়না, ভয় পায় না যে কোন ধরনের অপরাধ করে ফেলে কারন মা তো বাবাকে সব বলবে না অথবা মা কিছু মনে করবে না । মূলত: এই ধরনের আত্মবিশ্বাস থেকেই একটা বাচ্চা তার অপরাধ বোধে জড়িয়ে যায় ।
একজন রাগী মা নিত্যদিন সন্তানদের পেছনে লেগে থাকা এবং বলে বলে কাজ করানোর জন্য হয়তো আপনার জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল। কিন্তু আপনি কি জানেন? গবেষকদের মতে, কঠোর মায়েদের সন্তানেরাই ভবিষ্যতে সফলতার মুকুট পরিধান করতে সমর্থ হয়? অসহ্য মনে হলেও ভবিষ্যৎ এ আপনি আপনার মা’কে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে শেষ করতে পারবেন না। এটাই সত্যি!
 
২০০৪ থেকে ২০১০ সালের ভেতর ১৫ হাজারের চেয়ে বেশি বাচ্চাদের যাদের বয়সসীমা ১৩-১৪ বছর ছিল তাদের ওপর ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এসেক্স বিশ্ববিদ্যালয় একটি গবেষণা চালায়। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণায় দলের অধ্যাপক এরিকা র‌্যাসকন জানিয়েছেন, কঠোর মায়েদের সন্তানের জীবন সাফল্যে পরিপূর্ণ- এটা প্রমাণিত এবং সেই মায়েরা সন্তানদের শৈশবে শাসন করেছিলেন।
 
অনেক বাচ্চারাই তাদের মায়েদের যমের মতো ভয় পান। কিন্তু কঠোর মায়েদের কড়া শাসন পরবর্তী জীবনে বেশ সাহায্য করবে আপনাকে। বড় হবার পর মাকে বারবার ধন্যবাদ জানাবেন সাফল্যপূর্ণ একটি জীবনের জন্যে। শুধু তাই নয়, সে শিক্ষায় আপনি আপনার সন্তানকেও শিক্ষিত করতে চাইবেন।
 
আমি আমার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি আমার মা ছিল ভিষন কড়া এবং দায়িত্বশীল ,কখনও আমার বাবাকে আমাদের টুকিটাকি কোন জিনিষই হ্যান্ডেল করতে হয়নি , দায়িত্ব ও শাসন মিশিয়ে মানুষ করছে বিধায়ই ,আমাদের বাবা খুব ছোট বয়সে মারা যাওয়ার পরও সমাজের একটা স্তরে আমাদের ভাইবোন গুলো জায়গা করে নিতে পেরেছে ।আর আমার বাবার আচরন ছিল উল্টো মায়ের মত , আমি ও আমার ২ ভাইবোন বাবার জন্য অপেক্ষায় থাকতাম কখন বাবা বাড়ী ফিরবে মায়ের বিরূদ্ধে অভিযোগ করব ,,,অথচ এত রাগী বাবা আমাদের বন্ধু ছিল ,,,এটা ব্লেসিং বলব ।
 
অপরদিকে আমার আত্নীয় স্বজন ও বন্ধুবান্ধদের কিছু পরিবার দেখেছি যাদের মা ছিল বন্ধু বাবা কে তৈরী করছে তার মা শাসন করার আবতার হিসেবে ,কিন্তু কই দেখিনি তাদের পরিবারের কেউ নিজস্ব তা নিয়ে একটা সন্তান সমাজে নিজেকে পরিচিত করতে পেরেছে ।
 
তবে ব্যাতিক্রম সব পরিবারেই হতে পারে ,,,
ওটা দু একটা উদাহারন যাকে আমরা গড় পরতায় ভাল উপমা হিসেবে ফেলতে পারি না ।

Related posts

 রাজধানীর পরিস্থিতি করোনায় নাজুক হওয়ার সম্ভাবনা : স্বাস্থ্য অধিদফতর

Irani Biswash

৩৫ বছরের পর সন্তান নিলে যেসব ঝুঁকি, জেনে নিন করণীয়

razzak

থার্টিফার্স্ট ঘিরে কক্সবাজার ও কুয়াকাটায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা

razzak

Leave a Comment

Translate »