বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু বাংলাদেশের মানুষের কাছে নন, সারা বিশ্বের মানুষের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস। তিনি স্বাধীনতার নিরন্তর আইকন এবং ক্যারিশমেটিক নেতা। বাঙালির অধিকার আদায়ে এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে তার ত্যাগ দীর্ঘদিন স্মরণে থাকবে। বঙ্গবন্ধুর উত্তরাধিকার এবং রাষ্ট্রনায়কত্ব ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করবে। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ তার বাংলাদেশ সফরকে সামনে রেখে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় এ কথা বলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ আজ দুদিনের সফরে ঢাকায় আসছেন।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতে মালদ্বীপের সরকার ও জনগণের তরফ থেকে বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের আমন্ত্রণে বঙ্গবন্ধু জন্মশতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে সফর করতে পেরে আমি সম্মানিতবোধ করছি।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ বলেন, জাতিসংঘের স্বল্পোন্নত (এলডিসি) দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় উন্নীত হওয়ায় আমি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণকে আজকের স্মরণীয় দিনে অভিনন্দন জানাচ্ছি। তিনি কোভিড-১৯ মহামারি দৃষ্টান্তমূলকভাবে ব্যবস্থাপনা করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারের প্রশংসা করেন। চলতি বছর মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৪৩তম বার্ষিকী। এই সম্পর্ক সর্বদা পারস্পরিক আস্থা ও সম্মানজনক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত। তবে আমাদের দুই দেশের মানুষের মধ্যে ঐতিহাসিক সংযোগ আরও অনেক পুরোনো, যখন দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে কড়ির বাণিজ্য প্রচলিত ছিল।
মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহামেদ সোলিহ বলেন, মালদ্বীপ ও বাংলাদেশের মধ্যে অনেক কিছুই অভিন্ন। আমরা উভয়ে মুসলিম দেশ, যারা নাগরিকদের উচ্চতর আর্থসামাজিক উন্নয়ন প্রত্যাশা করে। আমরা উভয়ে জলবায়ু পরিবর্তন ও সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির মতো অভিন্ন উদ্বেগ নিয়ে কাজ করাসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে অভিন্ন ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছি। আমাদের বন্ধন অত্যন্ত শক্তিশালী। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে মালদ্বীপের মানবসম্পদ উন্নয়নে বাংলাদেশ অবদান রেখে চলেছে। মালদ্বীপ বিপুলসংখ্যক অভিবাসী বাংলাদেশির আবাসস্থল, যা দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রেখে চলছে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ উদারতা নিয়ে বারবারই আমাদের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। কোভিড-১৯ মহামারির কালে তা প্রতিফলিত হয়েছে। এই সময়ে মালদ্বীপকে ত্রাণ সহায়তা দিয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও নেপালে আটকে পড়া মালদ্বীপের নাগরিকদের উদ্ধারে সহায়তা দিয়েছে। স্বাস্থ্য সহযোগিতার অংশ হিসাবে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর মেডিকেল দলও পাঠিয়েছে। এজন্য আমার দেশের জনগণ এবং আমি বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের কাছে ঋণী। আমি বাংলাদেশের জনগণের শান্তি, উন্নতি, সমৃদ্ধি কামনা করি। আমাদের দুই দেশের বিদ্যমান নিবিড় সম্পর্ক আরও জোরদার ও সংহত করতে আমার সরকারের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করছি।