মু: মাহবুবুর রহমান, নিউজিল্যান্ড থেকে
শামীম আলম খান ১৯৮৮ তে এসএসসি আর ১৯৯০-৯১ ব্যাচের ফার্মাসিস্ট। সর্বদা হাসিখুশি বন্ধুটি আমার, আজ কি নিদারুন কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি, ছোট ছোট দুটি বাচ্চাকে একাই সামলাতে হচ্ছে। আমার বন্ধুর বর্তমান অবস্থা একটু লেখার চেষ্টা করলাম। যদিও এ কষ্টের মধ্য দিয়ে যে যায় কেবল সে-ই বুঝে …
হোসনেয়ারা লাবনী, শিমুলের স্ত্রী। এবছরের ৫ই জানুয়ারী নিজেদের বিবাহ বার্ষিকীর দিনে নিজের ফেসবুক পেইজে শিমুল একটা পোস্ট দিয়ে লিখেছিলো, ‘‘দেখতে দেখতে ২০ বছর পার হয়ে গেলো, আমাদের জন্য দোয়া করবেন।’’ তখনও হয়তো আমার বন্ধুটি জানতো না, তাঁর প্রানপ্রিয় স্ত্রী ক্যান্সারে আক্রান্ত।
লাবনীর জীবনটাও ছিল আর দশটি মানুষের মতো স্বপ্নের হাসিতে প্রাণে প্রাণবন্ত। কিন্তু হঠাৎই যেন সব ওলোট পালট হয়ে গেলো। লাবনীর দুই কন্যা হৃদি আর রায়া এবং স্বামী শিমুলের জীবনের হাসি যেন নিমিষেই আশংকায় রূপ নিলো!
গত বছর থেকেই লাবনী মাঝে মাঝে জ্বর, ক্লান্তি কিংবা অবসাদে ভুগতেন। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে তিনি কোনো পরীক্ষা করাননি। এবছর জানুয়ারির মাঝামাঝি গলায় ও পেটে অস্বাভাবিক মাংসপিণ্ড দেখা দেয়ার পর দ্রুতই চিকিৎসকের পরামর্শ নেন এবং জানতে পারেন তিনি মরণ ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত।
লাবনীর ক্যান্সারটি আবার একটি অতি বিরল ক্যান্সার – টি-সেল প্রোলিম্ফোসাইটিক লিউকোমিয়া (T-cell prolymphocytic Leukemia)। ক্যান্সার নিশ্চিত হওয়ার পর বাংলাদেশেই জরুরী ভিত্তিতে এর চিকিৎসা শুরু করা হয় কিন্তু যেহেতু রোগটি অত্যন্ত বিরল তাই বাংলাদেশে এর যথাযথ চিকিৎসা সম্ভব হচ্ছিলোনা। এরপর বাংলাদেশের ডাক্তারদের পরামর্শেই লাবণীকে স্থানান্তর করা হয় ভারতের মুম্বাইয়ে।
বর্তমানে ভারতের ফোর্টিস হাসপাতালের প্রসিদ্ধ ক্যান্সার বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুরেশ আদভানির তত্ত্বাবধানে আছেন লাবনী। তবে লাবনীর যে চিকিৎসা এখন চলছে সেটি শুধুই ব্যয়বহুলই নয়, এককথায় হয়তো আকাশচুম্বি। চিকিৎসার জন্য যে মূল ওষুধটি দেয়া হয়েছে তার নাম “আলেমটুজুমাব” (Alemtuzumab) যার সাপ্তাহিক খরচ বাংলাদেশী টাকায় প্রায় ২৩ লাখ টাকা। আর পুরো চিকিৎসা চালিয়ে নিতে খরচ পরবে প্রায় ৮কোটি টাকা। যা বহন করা একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য অসম্ভব।
তাই আসুন আমরা সবাই আমাদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেই। আমার আপনার একটু সহায়তা লাবনীকে তাঁর স্বামী-সন্তানদের কাছে, তাঁর ভালোবাসার মানুষগুলোর কাছে ফিরিয়ে আনতে পারে। আর কাউকে তার প্রিয়জনের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার চেয়ে পরম পাওয়া আর কী হতে পারে।
আসুন লাবণীর পাশে দাড়াই আমরা সবাই। লাবণীকে বাংলাদেশে সাহায্য পাঠাতে পারেন এই ঠিকানায়: জনতা ব্যাংক লিমিটেড, অ্যাকাউন্ট নম্বর: ২৩৫৬৫০৬, মোহাম্মদপুর ব্রাঞ্চ, অ্যাকাউন্ট নাম : ডা. মো. বদিউজ্জামান (লাবণীর খালু)।
লাবণীকে বিকাশ করতে পারেন নাম : মো. বদিউজ্জামান (লাবণীর খালু), নম্বর : ০১৭৭৮৮৬৮৭০৯। নাফিসা শামীম হৃদি (লাবণীর বড় মেয়ে), নম্বর : ০১৭৩০৮৩৭৭৯৩।
জানি আপনারা সকলেই আছেন লাবনীর পাশে, তাঁর সন্তানদের পাশে, তাঁর পরিবারের পাশে। আসুন আমরা ছোট্ট হৃদি আর রায়ার স্নেহময়ী মা’কে তাদের কাছে ফিরিয়ে দেই।
লাবনীর জন্য তাঁর বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীরা একটি পেইজ খুলেছে ফেসবুকে Help-Laboni-Survive-Her-Battle-with-Leukemia-TPLL যেখানে লাবনীর চিকিৎসার ও তার এই ফান্ড কলেকশনের অগ্রগতি জানতে পারবেন। অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে লাবণীর জন্য খোলা হয়েছে ‘গো ফান্ড মি’ একাউন্ট, যেখানে পৃথিবীর যেকোনো প্রান্ত থেকেই যে কেউ চাইলেই ডোনেশন করতে পারবেন।
নিচের লিংকে লাবনীর জন্য ‘গো ফান্ড মি’ যে ফান্ড রেইজ করা হচ্ছে তার অ্যাকাউন্ট দেয়া আছে, যেখানে আপনারা যেকেউ বিশ্বের যেকোনো জায়গা থেকে ফান্ড ট্রান্সফার করতে পারবেন। আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্তভাবে কামনা করছি, আমরা করবো জয় নিশ্চয়…..
# মু: মাহবুবুর রহমান ; ফার্মাসিস্ট, নিউজিল্যান্ডের মেসি ইউনিভার্সিটির পিএইচডি গবেষক
ᐧ