নিজস্ব সংবাদদাতা: বর্তমান সরকার জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) অন্যান্য লক্ষ্যের সঙ্গে বৈষম্যহীন আইন ও নীতি প্রয়োগ বিষয়ক লক্ষ্য বাস্তবায়নে বৈষম্য বিরোধী আইন প্রণয়নের উদ্যোগসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক। তিনি আরও বলেন, যে কোনো দেশের টেকসই উন্নয়নের জন্য একটি বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক আইনি কাঠামো অপরিহার্য।
রোববার (২০ জুন) রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ আয়োজিত লেজিসলেটিভ রিসার্চ বিষয়ক এক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, এসডিজির গোল-১৬(বি) বাস্তবায়নে আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগ মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। এর অংশ হিসেবে ১৭৯৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত প্রণীত ১২ হাজার ৮৬টি আইনে কোনো বৈষম্যমূলক বিধান রয়েছে কিনা তা গবেষণার মাধ্যমে চিহ্নিতকরণের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদ/বিভাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আজ তাদের গবেষণালব্ধ ফলাফল উপস্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, গবেষণার মাধ্যমে তারা বিভিন্ন আইনের বৈষম্যমূলক বিধান, বৈষম্যের বিভিন্নরূপ— যেমন: লিঙ্গভিত্তিক বৈষম্য, ভাষার ব্যবহারের মাধ্যমে বৈষম্য, প্রয়োগের মাধ্যমে বৈষম্য ইত্যাদির স্বরূপ উদঘাটন করে বেশ কিছু সুপারিশ প্রদান করেছেন। আইন মন্ত্রণালয় এসব সুপারিশ বিশ্লেষণ করবে, যাতে সংশ্লিষ্ট আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কার করা যায়।
আইনমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর তিনি গবেষণার উপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন।গবেষণার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, আমরা কখনো কখনো দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করি যে, কেউ কেউ আইন বিষয়ে গবেষণা এবং ভালোভাবে পড়াশুনা ছাড়াই আইন সম্বন্ধে কথা বলে থাকেন, আইনের ব্যাখ্যা দিয়ে থাকেন। আইন এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যে, এ বিষয়ে ভালোভাবে পড়াশুনা ও গবেষণা না করে ব্যাখ্যা দেওয়া যায় না। দিলে জনগণ বিভ্রান্ত হয়।
লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সচিব মো. মইনুল কবিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কর্মশালায় আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারওয়ার, লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের যুগ্ম-সচিব মো. হাফিজ আহমেদ চৌধুরী, প্রকল্প পরিচালক ড. মোহাম্মদ মহিউদ্দীন বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া কর্মশালায় বৈষম্যহীন ও সমতাভিত্তিক আইনি গবেষণাকর্ম প্যাকেজ-১, ২, ৩ ও ৪ এর টিম লিডার যথাক্রমে অধ্যাপক ড. এম. আহসান কবির (রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক (চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়), অধ্যাপক কে.শামসুদ্দিন মাহমুদ (ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়) ও অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়) নিজ নিজ দলের গবেষণাকর্মের ফলাফল উপস্থাপন করেন।