নিজস্ব সংবাদদাতা: স্বাস্থ্য খাতের অনিয়ম, অক্সিজেন সংকটসহ কোভিড চিকিৎসায় অব্যবস্থাপনা নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেককে তুলোধুনো করেছেন জাতীয় পার্টি ও বিএনপির সংসদ সদস্যরা। একইসঙ্গে তারা স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নির্লজ্জ আখ্যায়িত করে তার পদত্যাগ দাবি করেছেন।
শনিবার (৩ জুলাই) সংসদের চলতি অধিবেশনের সমাপনী দিনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে সংসদ সদস্যরা এ দাবি জানান।
আলোচনার সূত্রপাত করে বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য গোলাম মুহম্মদ সিরাজ বলেন, বগুড়া এখন কোভিডের হটস্পট। গত তিনদিনে সেখানে ২৪ জন মারা গেছেন। সেখানে হাই ফ্লো নজেল ক্যানোলা সংকট। সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রী নেই। জেলার তিনটি কোভিড হাসপাতাল করোনা রোগীতে ঠাসা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রীর কঠোর সমালোচনা করে জাতীয় পার্টির রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, সেদিন সংসদে আমি সার্জিক্যাল মাস্ক কেনা নিয়ে কথা বলেছিলাম। আশা করেছিলাম স্বাস্থ্যমন্ত্রী সেটা তদন্ত করবেন, বিষয়টি দেখবেন। কিন্তু তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বললেন, ‘এটি সত্য নয়’। এজন্য আজ আমি তথ্য-প্রমাণ নিয়ে এসেছি। সংসদীয় কমিটি বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এসেছে। সত্য বিষয়টি এড়িয়ে না গিয়ে উনার তদন্ত করা উচিত ছিল। তাই আমার দাবি এ বিষয়ে তদন্ত করতে হবে।
তিনি বলেন, করোনা অত্যন্ত মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। সব জায়গায় সেনাবাহিনী নামিয়ে ভাইরাস প্রতিরোধ করতে হবে। পর্যাপ্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ বলেন, জিজ্ঞেস করলেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন সব দিচ্ছি। কিন্তু কোথাও কিছু নেই। এভাবে আমরা এক বছর সময় নষ্ট করেছি। আমাদের সংসদ সদস্যকে দায়িত্ব দিলে অর্থ দিলে আমরা সবকিছু ঠিক করতে পারতাম। কিন্তু আমাদের ওপর দায়িত্ব নয়। দায়িত্ব আমাদের ওপরে। তারা তো দুদিন পরে চলে যায়। জবাবদিহিতা তো তাদের নেই।
তিনি বলেন, আইসিইউ বেড আছে। কিন্তু প্রশিক্ষিত ডাক্তার নার্স নেই। অক্সিজেনের ব্যবস্থা নেই। অধিকাংশ রোগী অক্সিজেনের অভাবে মারা যাচ্ছেন। বিভিন্ন ঘটনায় তদন্ত কমিটি হয় কিন্তু কোনো কমিটির রিপোর্ট আজ পর্যন্ত আমাদের সামনে আসেনি। মানুষের জীবনের কী কোনো দাম নেই? করোনাতো এখন সারা বিশ্বেই রয়েছে। কিন্তু চিকিৎসায় কী এ ধরনের অনিয়ম মানা যায়?
জাতীয় পার্টির এই সংসদ সদস্য বলেন, সাতক্ষীরায় অক্সিজেনের অভাবে ৭ জন কোভিড রোগী এক ঘণ্টার মধ্যে ছটফট করতে করতে মারা গেছেন। আগের স্বাস্থ্যমন্ত্রী রুহুল হকের বাড়ি সেখানে। সেখানকার হাসপাতালটি ফাইভ স্টার মানের হওয়া উচিত ছিল। মন্ত্রীরা যান, মন্ত্রী আসেন। কিন্তু নিজের এলাকাটাও ঠিক রাখতে পারেন না।