আইন ও বিচার আন্তর্জাতিক জীবনধারা ব্রেকিং রাজনীতি

শের বাহাদুর দিউবা হতে যাচ্ছেন নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী

আন্তর্জাতিক সংবাদ :    নেপালের নতুন প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শের বাহাদুর দিউবা। দেশটির পার্লামেন্টের অচলাবস্থা নিরসনে নেপালের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট সোমবার এই আদেশ দিয়েছেন।

নেপালের সুপ্রিম কোর্টের কর্মকর্তা দেবেন্দ্র ধাকাল বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এই তথ্য জানিয়ে বলেছেন, আদালতের আদেশ অনুযায়ী, মঙ্গলবার বিকেল ৫ টার মধ্যে শের বাহাদুর দিউবাকে প্রধানমন্ত্রীর দফতরের দায়িত্ব নিতে হবে এবং আগামী সাত দিনের মধ্যে একটি নতুন সরকার গঠন করতে হবে।

নেপালের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল নেপালি কংগ্রেস পার্টির প্রধান ও এর আগে ৪ বার নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা ৭৫ বছর বয়সী শের বাহাদুর দিউবা আদালতের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, ‘সর্বোচ্চ আদালত দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করেছেন। এখন পার্লামেন্টের ৫ টি রাজনৈতিক দলের সদস্যদের সমন্বয়ে একটি জোট সরকার গঠনের কাজ শুরু হবে।’

এদিকে সর্বোচ্চ আদালতের এই সিদ্ধান্তকে নেপালের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী কে পি শর্মা ওলির জন্য বড় আঘাত হিসেবে মনে করছেন দেশটির রাজনীতি বিশ্লেষকরা। তার একটি কারণ- নেপালের জাতীয় রাজনীতিতে ওলির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দিউবা।

অপর কারণটি হলো, এতদিন পর্যন্ত তিনি দাবি করতেন, তিনি বা নেপালের প্রধান বিরোধী নেতা শের বাহাদুর দিউবা- কেউই এই মুহূর্তে সরকার গঠনে সক্ষম নন। সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের ফলে তার এই দাবি চুপসে গেল।

নেপালের মাওবাদি কমিউনিস্ট পার্টির বিদ্রোহী সদস্যদের গঠিত রাজনৈতিক দল কমিউনিস্ট ইউনিফাইড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট (ইউএমএল) পার্টির প্রধা কে পি শর্মা ওলি নেপালের প্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন ২০১৮ সালে। নেপালকে দুর্নীমূক্ত রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা ও দেশটির অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসা ওলির বিরুদ্ধে অল্প কয়েক মাসের মধ্যেই বিদ্রোহ শুরু হয় তার দলের ভেতর।

ওলির বিরুদ্ধে তার পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ- তিনি স্বেচ্ছাচারী এবং দলের সহকর্মীদের মতামতের গুরুত্ব দেননা। এমনকি, জাতীয় স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বহু বিষয়ে তিনি পার্টির সিদ্ধান্তকে পাশ কাটিয়ে নিজের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছেন।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার দল ইউএমএল থেকে দলে দলে পদত্যাগ করতে থাকেন এমপিরা। সম্প্রতি দুই ডজনেরও বেশি এমপি ইউএমএল ছেড়ে নেপালি কংগ্রেস পার্টিতে যোগ দিয়েছেন।

এসব ঘটানার জেরে ২০২০ সালে ডিসেম্বরে  প্রথম দফায় নেপালের পার্লামেন্ট বিলোপের উদ্যোগ নিয়েছিলেন ওলি, কিন্তু তাতে সফল হতে পারেননি। পরে ২০২১ সালের মে মাসে নেপালের ফের এই উদ্যোগ নেন তিনি।

দেশটির প্রেসিডেন্ট বিদ্যা দেবী ভান্দুরি কে ওলি বোঝাতে সক্ষম হন, যে তিনি বা শের বাহাদুর দিউবা- কারোরই এই মুহূর্তে পার্লামেন্ট চালানোর মতো অবস্থা নেই। সুতরাং পার্লামেন্ট বিলোপ ঘোষণা করা হোক। সেই অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি পার্লামেন্ট বিলোপ করার উদ্যোগও নেন।

কিন্তু নেপালি কংগ্রেস পার্টি এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়। সোমবার সুপ্রিম কোর্ট এ বিষয়ে রায় প্রদান করলেন।

সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের বিষয়ে ওলির প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স, কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। তার প্রধান সহকারী রাজন ভট্টরাই বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত নেপালের রাজনীতির জন্য বিশাল এক আঘাত। আমাদের পার্লামেন্টারি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দীর্ঘমেয়াদে এর প্রভাব থাকবে; কিন্তু তারপরও, আদালতের সিদ্ধান্তকে আমরা সম্মান জানাচ্ছি।’

সূত্র : রয়টার্স

Related posts

২০২১ সালে হজ পালনকারীদের জন্য কোভিড-১৯ এর টিকা গ্রহণ বাধ্যতামূলক

Mims 24 : Powered by information

দ্রুত অবৈধ দখলদারদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে -মেয়র আতিক

razzak

কানাডায় নদী থেকে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধার

Mims 24 : Powered by information

Leave a Comment

Translate »