এই মাত্র পাওয়া জীবনধারা প্রবাস কথা প্রিয় প্রবাসী

সাবিনার গানে আপ্লুত-অভিভূত প্রবাসীরা

করোনার ভীতি থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ক্ষেত্রে বাংলা গানের কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমীনের নাম নিউইয়র্কের সীমানা ছাড়িয়ে সারা আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়েছে। ৬৬ বছর বয়সেও টানা আড়াই ঘণ্টায় তিন ডজনের মত গান বিরামহীনভাবে পরিবেশনের মধ্যদিয়ে নিউইয়র্ক অঞ্চলের গান পাগল প্রবাসীদের আপ্লুত করেছেন। সুরের ইন্দ্রজালে সকলকে ভাসিয়ে নিয়েছেন সকলের অজান্তে।

বিশ্বের রাজধানী হিসেবে পরিচিত নিউইয়র্কের ফ্লাশিং মেডোজ পার্কের সবুজ অরণ্যে চমৎকার স্থাপত্য শিল্পের সমন্বয়ে নির্মিত কুইন্স থিয়েটার হলের আলো ঝলমল পরিবেশে কখন সময় ফুরিয়ে গেছে তাও অনেকে টের পাননি হারানো দিনের সবচেয়ে হৃদয় স্পর্শী সুর আর কথামালার মধ্যে ডুবে থাকায়। শতশত দর্শক-শ্রোতার মুহুর্মুহু করতালি আর অভিনন্দন বার্তায় সিক্ত হয়ে সাবিনাও মেতে উঠেছিলেন গানের মধ্যে।
সাবিনার এই একক সঙ্গীতানুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন ‘শো টাইম মিউজিক’র কর্ণধার আলমগীর খান আলম। তার এ আয়োজনে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন প্রবাসের শুদ্ধ সঙ্গীত চর্চার পৃষ্ঠপোষকগণ।

সাবিনার কণ্ঠে পরিবেশিত হয় এক সাগর রক্তের বিনিময়ে বাংলার স্বাধীনতা আনলে যারা, জন্ম আমার ধন্য হলো মা গো, সব ক’টা জানালা খুলে দাও না, ও আমার বাংলা মা, মাঝি নাও ছাড়িয়া দে, সুন্দর সুবর্ণ, আমি রজনী গন্ধ্যা ফুলের মত গন্ধ বিলিয়ে যাই, কত সাধনায় এমন ভাগ্য মেলে, চিঠি দিও প্রতিদিন, আমি আছি থাকবো-ভালবেসে মরবো, একটুসখানী দেখ-একটা কথা রাখো, সে যে কেন এলো না কিছু ভালো লাগে না, ইশারায় শীষ দিয়ে আমায় ডেকো না, গুণ গুণ গুণ গান গেয়ে নীল ভ্রমরা যায় ইত্যাদি সব গান। যুগের পর যুগ আগের গান রেকর্ডে যেভাবে সংরক্ষিত রয়েছে, ঠিক একই সুরে সাবিনা গাইলেন এবং প্রমাণে সচেষ্ট হলেন যে রক্তের সাথে মিশে থাকা প্রেরণা শক্তির কাছে বয়স কোন সমস্যা হয় না।

চলচ্চিত্রের গানের পাশাপাশি তিনি দেশাত্মবোধক গান থেকে শুরু করে ধ্রুপদী, লোকসঙ্গীত ও আধুনিক বাংলা গানসহ বিভিন্ন ধারার নানান আঙ্গিকের সুরে গান গেয়ে সাবিনা নিজেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। সম্প্রতি তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে এই প্রবাসেও তার জন্যে দোয়া-মোনাজাতের পাশাপাশি চিকিৎসার্থে অর্থ সহায়তার প্রয়াসও পরিলক্ষিত হয়েছে। আর সে দোয়াতেই সাবিনা সুস্থ হয়েছেন এবং প্রবাসীদের তার ঋণ শোধের অভিপ্রায়েই আলমগীর খানের অনুরোধে ছুটে এসেছেন নিউইয়র্কে।

উল্লেখ্য, চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দিয়ে তিনি এ যাবত ১৪টি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও ৬টি বাচসাস পুরস্কার অর্জন করেছেন। শিল্পকলার সঙ্গীত শাখায় অবদানের জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে ১৯৮৪ সালে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘একুশে পদক’ এবং ১৯৯৬ সালে সর্বোচ্চ বেসামরিক রাষ্ট্রীয় সম্মাননা ‘স্বাধীনতা পুরস্কারে’ ভূষিত করে। এ যাবত তিনি ১৬ হাজার গানে কণ্ঠ দিয়েছেন বলে অনুষ্ঠানে উল্লেখ করেছেন।

এ অনুষ্ঠানে বিশেষভাবে সম্মান জানানো হয়েছে মার্কিন মুল্লুকে বাংলাদেশী মালিকানাধীন প্রথম এবং এখন পর্যন্ত একমাত্র ‘আই গ্লোবাল ইউনিভার্সিটি’র চ্যান্সেলর আবুবকর হানিফকে। প্রবাসীদের ভাগ্য পরিবর্তনে নিরন্তরভাবে কাজের পাশাপাশি বাংলা সংস্কৃতির পৃষ্ঠপোষকতায় আবুবকর হানিফকে সমবেত দর্শক-শ্রোতার বিপুল করতালির মধ্যে ‘সম্মাননা ক্রেস্ট’ হস্তান্তর করেন জননন্দিত এই শিল্পী। এছাড়া উপ-মহাদেশের সুর সম্রাজ্ঞী সাবিনা ইয়াসমীনকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার প্রতিনিধিত্বকারি ব্যক্তিরাও ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এ সময় মঞ্চে ছিলেন কন্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান, ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার এটর্নী মঈন চৌধুরী, বিশ্ববাংলা টোয়েন্টিফোর টিভির সিইও আলিম খান আকাশ, রোটারি ক্লাবের প্রেসিডেন্ট আহসান হাবীব এবং সেক্রেটারি সাইফুল ইসলাম, এপেক্স ইন্টারন্যাশনালের লাইফ গভর্ণর আব্দুর রৌফ খান দীলিপ, সঙ্গীত শিল্পী রিজিয়া পারভিন, রানু নেওয়াজ, কমিউনিটি বোর্ড মেম্বার শাহনেওয়াজ, কমিউনিটি লিডার হাসান জিলানী প্রমুখ।

Related posts

নেপালে উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত: ৭২ আরোহীর সবাই নিহত

Mims 24 : Powered by information

ভ্যাকসিন জালিয়াতির কবলে অভিনেত্রী ও সাংসদ মিমি চক্রবর্তী

Irani Biswash

গতিপথ পাল্টে আরও শক্তিশালী ‘অশনি’, রেড এলার্ট জারি

razzak

Leave a Comment

Translate »