মার্কিন আইন প্রণেতাদের তাইওয়ান সফর কেন্দ্র করে যুক্তরাষ্ট্রকে ফের সতর্ক করেছে চীন। বেইজিংয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, চীনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যে তাইওয়ানের বিচ্ছিন্নতাবাদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা মানে আগুন নিয়ে খেলা করা। এরপরও যোগাযোগ চালিয়ে গেলে এতে যুক্তরাষ্ট্র নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র আগুন নিয়ে খেলছে, তাইওয়ান ইস্যুতে চীন
তাইওয়ান ইস্যুতে সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের নানা কর্মকাণ্ডে ক্ষুদ্ধ চীন। মার্কিন আইন প্রণেতাদের তাইওয়ান সফরকে কেন্দ্র করে ফের নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বেইজিং। স্থানীয় সময় বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন ওয়াশিংটনকে সতর্ক করে বলেন, তাইপের সঙ্গে মার্কিনদের যোগাযোগের চেষ্টা অঞ্চলটিকে অশান্ত করে তুলতে পারে।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, কয়েকজন মার্কিন আইন প্রণেতার তাইওয়ান সফর এক চীনা নীতির প্রতি অসম্মান। চীন দৃঢ়ভাবে এর বিরোধিতা করে। অঞ্চলটির বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তিকে ভুল সংকেত পাঠানো এড়িয়ে চলুন। এমন কিছু করবেন না যা চীন-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে।
সংবাদ সম্মেলনে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন আরো বলেন, দ্বীপটির বিচ্ছিন্নতাবাদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করা মানে আগুন নিয়ে খেলা করা।
চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে একটি বিষয় বোঝার অনুরোধ করছি, আর তা হলো, তাইওয়ানের স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করার অর্থ আগুন নিয়ে খেলা করা, এতে নিজেরাই পুড়ে যাবেন। চীনের পুনরেকত্রীকরণ প্রক্রিয়ার বিরুদ্ধে কোনো ব্যর্থ চেষ্টা করবেন না।
এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের আইন প্রণেতাদের একটি দল স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মার্কিন নৌবাহিনীর বোয়িং সি-ফোর্টি সামরিক বিমানে তাইপে পৌঁছায়। বিমানবন্দরে কিছুক্ষণ অবস্থানের পর বিমানটি জাপানের ওকিনাওয়ার উদ্দেশে যাত্রা করে।
মিথেন গ্যাস নির্গমন ও জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করা থেকে সরে এসে ক্লিন এনার্জিতে রূপান্তর এবং কার্বন নির্গমন রোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে যৌথ পদক্ষেপ নিতে রাজি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। পাশাপাশি আগামী দশকে জলবায়ু সহযোগিতা বাড়ানোরও আশ্বাস দিয়েছে দুই দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবিলায় স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় চলমান কপ-২৬ সম্মেলনে এ ঘোষণা আসে।
জাতিসংঘের আয়োজনে স্কটল্যান্ডের গ্লাসগোয় চলছে জলবায়ু সম্মেলন কপ টুয়েন্টি সিক্স। সম্মেলন শেষ হবে আগামী শুক্রবার। সময় ফুরিয়ে আসছে দ্রুত, হাতে আছে আর মাত্র একদিন। প্রতিদিনকার মতো এদিনও বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলেন বিশ্ব নেতাদের প্রতিনিধিরা। তবে বুধবার এলো অনেকটা অপ্রত্যাশিত এক ঘোষণা। যুক্তরাষ্ট্র ও চীন যৌথ এক ঘোষণায় জানায়, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় একসঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে তারা।
সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি জন কেরি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের মধ্যে মতপার্থক্যের কোনো অভাব না থাকলেও জলবায়ুর সংকট নিরসন বিষয়ে সহযোগিতার মাধ্যমে কাজটি সম্পন্ন করাই এখন একমাত্র উপায়।
চীনের শীর্ষ জলবায়ু আলোচক শি জেনহুয়া সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, কার্বন নির্গমন কমাতে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেবে চীন।
২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী ব্যাপক নির্গমন হ্রাসের মাধ্যমে বৈশ্বিক গড় তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে উষ্ণতা বৃদ্ধি থেকে রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিশ্ব নেতারা। যদিও আগের সেই চুক্তিতে সই করতে অসম্মতি জানিয়েছিল চীন। এর পরিবর্তে জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণের কথা বলেছিল দেশটি। তবে এবারের ঘোষণার পর আশার আলো দেখছেন পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।