অর্থনীতি এই মাত্র পাওয়া বাংলাদেশ

করোনাকালে বৈদেশিক ঋণের প্রবৃদ্ধি ৪২ শতাংশেরও বেশি

দেশের বেসরকারি খাতে ব্যাংকঋণের প্রবৃদ্ধি বহুদিন ধরে ৮ শতাংশের ঘরে আটকে থাকলেও এ খাতে বিগত পাঁচ বছরে বৈদেশিক ঋণের পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। এর মধ্যে মহামারি করোনার সময়ে বৈদেশিক ঋণের প্রবৃদ্ধি ৪২ শতাংশেরও বেশি।

করোনার পূর্ববতী সময় ২০১৯ সালের শেষের দিকে দেশের বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের ছিল ১ হাজার ৩১১ কোটি ডলার। এটি করোনাকালীন অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়েও ২০২১ সালের জুন নাগাদ এ খাতে বৈদেশিক ঋণ ৫৫৭ কোটি ডলার বা ১ লাখ ৫৮ হাজার কোটি টাকার বেশি বৃদ্ধি পেয়ে এখন ১ হাজার ৮৬৮ কোটি ডলারে বেশি ছাড়িয়েছে। এতে স্বল্পমেয়াদি ঋণের পরিমাণ ১ হাজার ১৮০ কোটি ডলার এবং দীর্ঘমেয়াদি ঋণ ৬৮৮ কোটি ৮৭ লাখ ডলার।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সূত্রে জানা গেছে, বিগত দেড় বছর করোনা অতিমারির সময়ে বৈদেশিক ঋণের বেশ দ্রুতবেগে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০২০ সালে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি উভয় ক্ষেত্রে বেসরকারি বৈদেশিক ঋণ ১ হাজার ৪৭৬ কোটি ডলার, এটি ২০২১ সালের জুন নাগাদ ১ হাজার ৮৬৮ কোটি ৮৪ লাখ ডলারেরও বেশি ছাড়িয়েছে গেছে।

বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণের এ প্রকার বৃদ্ধির নানা কারণ রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে করোনাকালীন উন্নত দেশগুলো ও বহুজাতিক সংস্থাগুলোর বিনিয়োগযোগ্য অলস তারল্যের বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে দেশের বড় বড় করপোরেট কোম্পানিগুলো সর্বোচ্চ ২ শতাংশ সুদ দেওয়া অন্যতম। এ ছাড়াও পূর্বের ঋণ ক্ষেত্রে পরিশোধের সময় বৃদ্ধিও বৈদেশিক ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে।

তবে এতে প্রতিকূল পরিস্থিতি তৈরির আশঙ্কা করছেন অনেকে। যেহেতু ডলারের বাজার স্থিতিশীল নয়, সেহেতু ঋণ পরিশোধকালে এর বিনিময় হার বৃদ্ধি পেলে ঋণগ্রহীতারা লোকসানে সম্মুখীন হবেন। অপরদিকে সরকারেরও বড় বড় প্রকল্পে বিপুল পরিমাণে বৈদেশিক ঋণ রয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ দুর্বল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ দিকে দেশের শিল্পোদ্যোক্তারা বৈদেশিক ঋণের হেজিং সুবিধা পান না। হেজিং মূলত ডলার মূল্যবৃদ্ধির সংকট ঝুঁকির ক্ষেত্রে রক্ষা করে।

ব্যাংকের অফশোর ইউনিট বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণপ্রবাহের প্রধান মাধ্যম। দেশে ৩৬টি ব্যাংক অফশোর ব্যাংকিং কার্যক্রম রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) এর মাধ্যমেও বেসরকারি খাতে বৈদেশিক ঋণ বিতরণ হয়ে থাকে।

হংকং হচ্ছে দেশের শিল্পোদ্যোক্তাদের বৈদেশিক ঋণের সবচেয়ে বড় উৎস। ইতোমধ্যে ২০২১ সালের জুন পর্যন্ত বাংলাদেশি শিল্পোদ্যোক্তারা ১৬৩ কোটি ৪১ লাখ ডলারের দীর্ঘমেয়াদি বৈদেশিক ঋণ নিয়েছেন। তাছাড়াও ঋণদাতাদের র্শীষ ১০টি দেশ হচ্ছে চীন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, সিঙ্গাপুর, সৌদি আরব, জার্মানি, জাপান ও সংযুক্ত আরব আমিরাত।

এ দিকে লাইবর এর তথ্য মতে, বর্তমানে প্রতিষ্ঠানের গড়ে সুদের হার দশমিক ২২ শতাংশ। চলতি সপ্তাহে এক বছর মেয়াদি সুদের হার দশমিক ২৭ শতাংশ, ছয় মাস মেয়াদি সুদের হার দশমিক ১৮ শতাংশ।

Related posts

‘বিশ্বে মানসিক স্বাস্থ্যসংকটে ভুগছে ১০০ কোটি মানুষ’

razzak

বোমা হামলার মধ্যে মারিউপোলে এক লাখ মানুষ অবরুদ্ধ: জেলেনস্কি

razzak

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সময় এসেছে: সালমান এফ রহমান

Irani Biswash

Leave a Comment

Translate »