করোনার প্রকোপ কমতে না কমতেই বেড়েছে বিশ্ব বাণিজ্যের প্রসার। এর সাথে সাথেই বেড়েছে আমদানি ব্যয়। আমদানি ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় উন্নয়নশীল এবং নিম্নআয়ের দেশগুলো বাড়তি চাপের মুখোমুখি হবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)।
এফএও’র মতে, করোনা মহামারির শুরুতে বৈশ্বিক বাণিজ্যে মারাত্মক মন্দাভাব দেখা দিলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিকের সাথে সাথে সবকিছু চাঙ্গা হয়ে উঠতে শুরু করেছে। এতে করে চলতি বছরে খাদ্য এবং জ্বালানি মূল্য দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। উন্নত দেশগুলো এই অবস্থার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারলেও দরিদ্র দেশগুলো নিজেদের খাদ্য চাহিদা মেটাতে গিয়ে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে।
চলতি বছর খাদ্যপণ্যের বৈশ্বিক আমদানি ব্যয় সর্বকালের সর্বোচ্চে পৌঁছবে। ১ দশমিক ৭৫ ট্রিলিয়ন ডলারের গণ্ডি ছাড়াতে পারে আমদানি বিল। সে হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে বিল বাড়বে ১৪ শতাংশ। এছাড়া চলতি বছরের জুনে দেওয়া পূর্বাভাসের তুলনায় ১২ শতাংশ বাড়বে বলে মতামত জানিয়েছে এফএও।
আমদানি ব্যয় বৃদ্ধির মূল কারণ হিসেবে সংশ্লিষ্টরা খাদ্যপণ্যের অবাধ লেনদেন এবং জাহাজীকরণ ব্যয় বৃদ্ধিকে দায়ী করছে। অল্প কয়েক মাসের ব্যবধানে জাহাজীকরণ ব্যয় বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। এতে করে আমদানি ব্যয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে সমান তালে।
মোট বৃদ্ধিপ্রাপ্ত আমদানি বিলের ৪০ শতাংশের জন্যই দায়ী উন্নয়নশীল দেশগুলো। এসব দেশের খাদ্য আমদানি ব্যয় গত বছরের তুলনায় ২০ শতাংশ বাড়তে পারে। এমনকি নিম্ন আয়ের খাদ্যঘাটতির দেশগুলোয় আমদানি ব্যয় দ্রুত বাড়বে বলেও মনে করা হচ্ছে। কারণ এসব দেশে যে হারে খাদ্যপণ্য আমদানি বাড়ছে, তার চেয়ে দ্রুত বাড়ছে ব্যয়।
উন্নয়নশীল দেশগুলোয় সবচেয়ে বেশি বাড়ছে খাদ্যশস্য, পশুখাদ্য, ভোজ্যতেল ও তেলবীজের দাম। এক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলোকে ফল, সবজি, মাছ ও পানীয় পণ্য ক্রয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে।
এফএও’র মতে, বর্তমান বিশ্বে খাদ্যশস্য উৎপাদন যেমন রেকর্ড পরিমাণে বৃদ্ধি পাবে, একই তালে বৃদ্ধি পাবে খাদ্যশস্যের ব্যবহারও।
এ বছর চাল এবং ভুট্টা উৎপাদন রেকর্ড উচ্চতায় পৌছাতে পারে বলে ধারণা করা যাচ্ছে। যদিও বর্তমানে তেলবীজের মজুদে কিছুটা ঘাটতি রয়েছে, তবে গত মৌসুমের তুলনায় চলতি বছর উৎপাদনে কিছুটা উন্নতি হয়েছে।