করোনার ধকল কাটিয়ে আর্থ-সামাজিক পরিবেশ স্বাভাবিক হওয়ায় বাড়ছে দেশের আমদানি। এতে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে আমদানি ব্যয়। করোনা পরবর্তী চাহিদা বাড়ার কারণেই আমদানি বেড়েছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও আমদানি ব্যয়ের আড়ালে অর্থ পাচারের আশঙ্কাও করছেন অর্থনীতিবিদরা।
দেশে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় হাওয়া লেগেছে আমদানির পালে। বাড়ছে ডলারের চাহিদা ও দাম। কমছে টাকার মান। এমন অবস্থায় বৈদেশিক রিজার্ভ থেকে ইতোমধ্যে বাজারে ছাড়া হয়েছে অন্তত ১৩০ কোটি ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর- এই তিন মাসে আমদানি ব্যয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৪৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ।
শুধু সেপ্টেম্বরেই আমদানি ব্যয় দাঁড়ায় ৭০০ কোটি ডলার বা ৬০ হাজার কোটি টাকা। যা গত বছরের সেপ্টেম্বরের চেয়ে প্রায় ৫০ শতাংশ বেশি এবং দেশের ইতিহাসে রেকর্ড। ব্যবসায়ীরা বলছেন, টিকা দিয়ে করোনা নিয়ন্ত্রণে আনার ফলে ব্যবসা-বাণিজ্যের স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসায় এবং গ্রাহকদের চাহিদা বাড়ার কারণেই আমদানি বাড়ছে।
জি এইচ ইন্টারন্যাশনালের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন সময় সংবাদকে বলেন, মানুষের চাহিদা আগে থেকেই ছিল কিন্তু করোনাসময়ে মানুষের হাতে টাকা ছিল না। এখন টাকা আসতে শুরু করেছে, মানুষ শপিং সেন্টারে যাচ্ছে। মানুষের চাহিদা মেটাতেই আমদানি বেড়েছে।
আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন বাংলাদেশের সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে আসলে কাঁচামাল বলতে চামড়া আর পাট ছাড়া কিন্তু কিছুই নেই। তাই বাকি সকল পণ্য এবং কাঁচামালের জন্য আমারা আমদানি নির্ভর।
দেশে আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি বা ব্যয়ের রেকর্ডকে সার্বিকভাবে অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়ানোর প্রতীক হিসেবে দেখছেন অর্থনীতিবিদরা। তবে এর বিপরীতে অর্থ পাচারের আশঙ্কাও করছেন তারা।
এছাড়াও বাড়তি আমদানি ব্যয় পরিশোধে রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে রফতানির পাশাপাশি রেমিট্যান্স বাড়ানোর দিকে জোর দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন অর্থ বিশ্লেষকরা।