মধ্য সুইজারল্যান্ডের শিলনর্থ পাহাড়ি চূড়ার পাদদেশে অবস্থিত “মুরেন” একটি সুইস গ্রাম। সমভূমি থেকে প্রায় এক হাজার ৬৩৮ মিটার উঁচুতে অবস্থিত গ্রামটিতে পৌঁছতে একমাত্র যানবাহন ক্যাবল ট্রেনে।
হেঁটে বা গাড়িতে করে ওই গ্রামে যাওয়া যায় না, যাওয়ার রাস্তাও নেই। গ্রামটিতে পৌঁছার পর সেখান থেকে চারটি ক্যাবল কারের সিরিজের মাধ্যমে মুরেন ডাউনহিল থেকে গ্রিমেল ওয়াল্ড, স্টেচেলবার্গ, শিলনর্থ চূড়া এবং গ্লোরিয়া ঘূর্ণায়মান রেস্তোরাঁ পর্যন্ত যাওয়া যায়।
গ্রামটিতে জেমস বন্ড অনেক দিন থেকেছেন এবং অভিনয় করেছেন। তার মুভি “অন হার ম্যাজেস্টি” ও “০০৭ ” মুভির অনেক দৃশ্য এই গ্রামের মধ্যে ও গ্রামের পাদদেশে অভিনীত হয়েছিল। পরবর্তীতে অনেক হিন্দি মুভির অভিনয় এখানে চিত্রায়িত হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামটির পাদদেশে অবস্থিত জেমস বন্ড ওয়াল্ড শিরোনামে বড় বড় সাইনবোর্ডে জেমস বন্ডের ছবি রয়েছে। জেমস বন্ডের ছবির পাশে দাঁড়িয়ে একটি বারের জন্য নিজের ছবি ক্যামেরাবন্দি করেননি, এমন পর্যটকের দেখা পাওয়া যাবে না।
প্রায় ৫০০ গ্রামবাসীর বসবাস পৃথিবীর বিখ্যাত এই “মুরিন”গ্রামটিতে। একটি স্কুল রয়েছে এখানে। সবকিছু মিলিয়ে হৃদয় হরন করা সৌন্দর্যের লীলাভূমি গ্রামটিতে যেসকল হোটেল রয়েছে ,যার মধ্যে থাকার সিট আছে দুই হাজারেরও বেশি। দুই হাজার ট্যুরিস্ট এই গ্রামে থাকতে পারেন প্রতি রাতে কিন্তু গ্রামের জন সংখ্যা মাত্র ৫০০।
বর্তমান করোনা পরিস্থিতির পূর্বে এই গ্রামের সাধারণ হোটেলে থাকার জন্য বিশ্বের বড় বড় শহরে ফাইভস্টার হোটেলের চেয়ে অনেক বেশি খরচ করতে হতো।
সুইজারল্যান্ডের পর্যটনকেন্দ্রের তথ্য মতে, সুইস বিখ্যাত এইসব গ্রামের ঘুরতে আসা একটা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক পর্যটক হলো এশিয়ান, বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের। সমতল ভূমি থেকে প্রায় পৌনে দুই কিলোমিটার ওপরে অবস্থিত মুরেন গ্রামটিতে ট্রেনে পৌঁছার যাওয়া- আসার পথে দু’পাশে চোখে পরবে নয়নাভিরাম দৃশ্য। নিচ থেকে পাহাড়ের ওপরের “মুরেন” গ্রামটিতে ক্যাবল ট্রেনে পৌঁছতে সময় লাগে বিশ মিনিটের মতো।
দু’পাশের দৃশ্য দেখতে দেখতে মনে হবে, পৌঁছতে সময়টা যদি আরও একটু বেশি লাগত। এত সুন্দর আর সৌন্দর্যের লীলাভূমি সুইজারল্যান্ডের গ্রাম “মুরেন” যে তাকে ছেড়ে আসতেও মন সায় দেয় না। তাই বারবার এখানে ফিরতে চায় সৌন্দর্যপাগল পর্যটক।