অপরাধ এই মাত্র এই মাত্র পাওয়া

হাত-পা বেঁধে চুল কেটে গৃহবধুকে অমানুষিক নির্যাতন

যৌতুকের টাকা না পেয়ে সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের খাস সাত বাড়িয়া গ্রামে হাত-পা বেঁধে গৃহবধূ গুলনাহার পারভীন মিনুকে অমানুষিক নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। কেটে দেওয়া হয়েছে মাথার চুল, ব্লেড দিয়ে চেঁছে ফেলা হয়েছে দুই চোখের ভ্রু। ঘটনাটি ঘটেছে গত ১৩ ডিসেম্বর রাতে। এরপর তাকে আটকে রেখে হাতুড়ে ডাক্তার দিয়ে চিকিৎসা করানো হয়। খবর পেয়ে মিনুর পরিবার মুমূর্ষু অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে গতকাল সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হাসপাতালে ভর্তি করেছে।

ভুক্তভোগী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৩ বছর আগে শাহজাদপুর উপজেলার খাস সাতবাড়িয়া গ্রামের মৃত. আবদুর রশিদের ছেলে মেহেদি হাসান সুজনের সঙ্গে পাশের তাড়াশ উপজেলা সদরের মৃত. গোলাম মোস্তফার মেয়ে গুলনাহার পারভীন মিনুর পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের দুটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই স্বামী যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছে। এ ছাড়া স্ত্রী সুন্দরী হওয়ায় তাকে সন্দেহ করত সুজন।
দরিদ্র পরিবারের পক্ষে যৌতুক দেওয়া সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হলে নির্যাতনের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। এ ব্যাপারে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার সালিশ হয়েছে। তবুও থামেনি নির্যাতন। পরে নির্যাতন সইতে না পেরে ২০১৮ সালে বাবার বাড়ি ফিরে যান মিনু। ছোট বাচ্চাদের কথা চিন্তা করে ফের তাকে স্বামীর বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
নির্যাতিত গৃহবধূর মা আনোয়ারা খাতুন জানান, বিয়ের সময় জামাতাকে যৌতুক হিসেবে নগদ ১ লাখ টাকা, স্বর্ণালঙ্কার, খাট, আলমারিসহ প্রায় ২ লক্ষাধিক টাকার মালামাল দেওয়া হয়।

সিরাজগঞ্জ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গৃহবধূ গুলনাহার পারভীন মিনু জানান, বিয়ের পর থেকেই কখনো নগদ টাকা, কখনো মোটরসাইকেল, কখনো মোবাইল ফোন বাবার বাড়ি থেকে এনে দেওয়ার জন্য বিভিন্ন সময় শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে আসছিল। এ ছাড়া অন্য কারও সঙ্গে কথা বললেই সন্দেহ করে বিভিন্ন সময় তার ওপর শারীরিক নির্যাতন চালাত স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। অভিযুক্ত মেহেদি হাসান সুজন বলেন, ‘আমার স্ত্রী এক প্রবাসীর সঙ্গে পরকীয়ায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। প্রায়ই ভিডিও কলে কথা বলেন। তাই আমি রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পেরে ঘটনা ঘটিয়েছি।’ শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিদ মাহমুদ খান বলেন, এ বিষয়ে এখনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিরাজগঞ্জ বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রোকন উদ্দিন বলেন, গৃহবধূর সারা শরীরে নির্যাতনের ক্ষত চিহ্ন রয়েছে। চিকিৎসা চলছে। নির্যাতনের কারণে মানসিকভাবে রোগী ভীষণ বিপর্যস্ত।

Related posts

ন্যাটোকে ‘জবাব’ দিতে নতুন পরিকল্পনা রাশিয়ার

razzak

অটিজমবান্ধব সমাজ বিনির্মাণে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

razzak

মালদ্বীপে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সমস্যা সমাধানে সরকার ব্যবস্থা নেবে: প্রধানমন্ত্রী

razzak

Leave a Comment

Translate »