নেইমারের ফেরার ম্যাচে লজ্জায় ডুবলো প্যারিস সেন্ট জার্মেই। শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) নঁতের মাঠে খেলতে গিয়ে ৩-১ গোলে হেরে গেছে লিগ ওয়ানের শীর্ষস্থানধারী দলটি। ফেরার ম্যাচে গোল করলেও মিস করেছেন পেনাল্টি।
চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ১৬ এর ম্যাচে রিয়ালকে হারানো পিএসজির হঠাৎ ছন্দপতন হয়েছে। লিগে ১৫ ম্যাচ পর হারের মুখ দেখেছে মেসি-নেইমারদের দল। পঞ্চম স্থানে থাকা নঁতের বিরুদ্ধে তাদের মাঠে হেরে এসেছে পূর্ণশক্তির দল নিয়ে।
২০১০ এর পর এদিনই প্রথম পিএসজি প্রধমার্ধ শেষেই ৩ গোলের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ে। ম্যাচের শুরু থেকে বল দখলে এগিয়ে থাকলেও উল্টো ৪ মিনিটের মাথাতেই গোল খেয়ে পিছিয়ে পড়ে পচেত্তিনোর শিষ্যরা। এই গোলের বিহ্বলতা না কাটতে আবার ১৬ মিনিটে গোল পায় নঁতে।
বল দখলে পিছিয়ে থাকলেও পিএসজির বিপক্ষে আক্রমণে পিছিয়ে ছিলো না নঁতে। মাত্র ২৮ শতাংশ সময় বল পায়ে রাখলেও পিএসজির ১৬ শটের বিপরীতে নঁতে গোলে শট করে ১৩ বার। এর মাঝে পিএসজির অন টার্গেটে শট ছিলো ৯ টি। পিছিয়ে ছিলো না নঁতেও। তারা অনটার্গেট শট রাখে ৭ টি।
পিএসজির বিরুদ্ধে সর্বশেষ তিন ম্যাচের দুটিতেই জয় তুলে নিলো নঁতে। অন্যদিকে পিএসজি যেন খেই হারিয়ে প্রতিপক্ষের মাঠে। সর্বশেষ ৯ অ্যাওয়ে ম্যাচে মাত্র তিনটিতে জয় পেয়েছে পচেত্তিনোর দল। অথচ এর আগের ১২ ম্যাচে মাত্র একটিতেই জয় পায়নি প্যারিসের দলটি।
গত নভেম্বরে নঁতের বিপক্ষেই প্রথম দেখায় ঘরের মাঠে ৩-১ গোলে জয়ের দিনে পিএসজির জার্সিতে লিগ ওয়ানে প্রথম গোল পেয়েছিলেন মেসি।
একই দলের বিপক্ষে স্পর্শ করলেন আরেকটি মাইলফলক। এবার ক্লাব ক্যারিয়ারে ৮০০ ম্যাচ খেলার মাইলফলক স্পর্শ করলেন সাবেক বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড। কিন্তু এদিনটা হয়তো চাইবেন না স্মরণে রাখতে।
অবশ্য ম্যাচের প্রথম সুযোগ পায় পিএসজিই। তৃতীয় মিনিটে নেইমারের থ্রু বল ধরে হুয়ান বের্নাতের শট এগিয়ে এসে রুখে দেন গোলরক্ষক আলবাঁ লাফুঁ। পরের মিনিটেই পাল্টা আক্রমণে এগিয়ে যায় নঁতে। সতীর্থের পাসে ডি-বক্সে কোলো মুয়ানির শট এগিয়ে আসা গোলরক্ষক কেইলর নাভাসের দুই পায়ের ফাঁক দিয়ে জালে জড়ায়।
ষোড়শ মিনিটে আবার পিএসজিকে হতাশ করে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নঁতে। ডি-বক্সে সতীর্থের পাস পেয়ে মেরলিনের শট পোস্টের ওপরের কোণা দিয়ে জালে আশ্রয় নেয়।
প্রথমার্ধের শেষের দিকে ডি-বক্সের সামনে এমবাপ্পেকে পেছন থেকে টেনে ধরে সরাসরি লাল কার্ড দেখেন নঁতের ডিফেন্ডার দেনিস। পরে অবশ্য ভিএআরের সাহায্যে আগের সিদ্ধান্ত পাল্টে তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি।
পিএসজির কফিনে শেষ পেরেকটি ঠুকেন লুদোভিচ ব্লাঁস। স্পটকিকে গোল করলে নঁতে ৩-০ ব্যবধানে এগিয়ে যায়। ডি-বক্সে পিএসজির মিডফিল্ডার জর্জিনিয়ো ভেইনালডামের হাতে লাগলে ভিএআরের সাহায্যে পেনাল্টির বাঁশি বাজিয়েছিলেন রেফারি।
দ্বিতীয়ার্ধের ২ মিনিটের সময় গোল করে ব্যবধান কমান ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড নেইমার। মেসির বাড়ানো পাস থেকে একজনকে কাটিয়ে গোল করেন পিএসজির নাম্বার টেন।
৫৪তম মিনিটে গোলের সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করেন এমবাপ্পে। মাঝমাঠের কাছাকাছি থেকে নেইমারের বাড়ানো বল ধরে ডি-বক্সে ঢুকে পড়া ফরাসি মহাতারকার শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন লাফুঁ।
এর তিন মিনিট পরেই পেনাল্টি পায় পিএসজি। ডিবক্সে এমবাপ্পেকে ফাউল করলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। কিন্তু নেইমারের দুর্বল কিক ফিরিয়ে দেন নঁতের গোলরক্ষক লাফুঁ।
এর পরেও বেশ কিছু সুযোগ পায় পিএসজি কিন্তু গোল মিসের মহড়া ও লাফুঁর দৃঢ়তায় গোল করতে ব্যর্থ হন মেসি-নেইমার-এমবাপ্পেরা। তাতেই ৩-১ গোলের হার নিশ্চিত হয় পয়েন্ট তালিকার শীর্ষ দলের।
২৫ ম্যাচে ৫৯ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে পিএসজি। এক ম্যাচ কম খেলে ৪৬ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে মার্সেই। নঁতের সংগ্রহ ২৫ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট। পয়েন্ট তালিকার ৫ নম্বরে আছে দলটি।