পানিতে হাত দিলেই হাত পুড়ে যায়, ঘেমে যাওয়া শরীরের অংশ পুড়ে যায়। এমনকি কান্নাকাটি করলেও, চোখের পানি যেভাবে গাল বেয়ে পড়ে, তাতে সেই অংশ পুড়ে যায়। এমন অদ্ভুদ ধরনের রোগের শিকার মাত্র ১৯ বছরের এক তরুণী।
মানুষের শরীরে নানা ধরণের রোগ বাসা বাঁধে। কিছু রোগ প্রায় সকলের জানা থাকলেও এমন অনেক রোগ আছে, যেগুলো এক কোথায় ভীষন রকমের অদ্ভুত। প্রথম অবস্থায় সেই রোগ ধরতেই হিমশিম খেয়ে যান চিকিৎসকরাও। যেমনটা ঘটেছে এই তরুনীর ক্ষেত্রে। ব্রিটেনের কেন্টের বাসিন্দা বছর উনিশের তরুণী অ্যাবি প্লামারের ক্ষেত্রে তার ঘাম শরীরের বাইরে এলেই অ্যাসিড হয়ে যায়, তাতেই পুড়ে যায় শরীরের ঘেমে যাওয়া অংশ। অন্যদিকে, সাধারণ তাপমাত্রার পানিতে হাত দিলেও, হাতের সেই অংশটুকু জ্বলে যায়। ফলে তিনি কষ্ট হলেও কাঁদতে পারেন না। কারণ তাতে পুড়ে যায় গাল। সামান্য গরমেও বাড়ির বাইরে যেতে পারেন না এক পা-ও, পাছে একটু ঘাম হয়। ফলে নানা ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হন তিনি।
চিকিৎসকদের পরিভাষায়, অ্যাবি যে বিরল রোগে আক্রান্ত, তার নাম Aquagenic Urticaria। ব্রিটেনের চিকিৎসকরা অনেক পর্যবেক্ষণের পরে জানিয়েছেন, এই রোগের ক্ষেত্রে শরীরের কোনও অংশে সাধারণ তাপমাত্রা হোক, বা ঠান্ডা পানি লাগলেই, সেই জায়গা পুড়ে যাবে। তবে অ্যাবির পানি পান করলে কোনও সমস্যা হয় না। এমনকি শরীরের মধ্যে সেই পানি যাওয়ার পরেও কোনও সমস্যা হয় না। সমস্যা হয় স্নান বা অন্য কাজের সময় যখন পানিনা অন্য কোনও তরল শরীরের বাইরে কোথাও স্পর্শ হয়। ফলে নিমেশের মধ্যে স্নান করে তাকে গা মুছে ফেলতে হয় একেবারে শুকন করে। বিশদে বললে স্নান করার পরে নিজেকে শুকনো করার জন্য অনেক বেশি তৎপর হতে হয়। কিন্তু তারপরেও সারা শরীর পুড়ে যাওয়ার মতো লাল হয়ে যায়। র্যাশ বেরোয়।
অ্যাবি জানিয়েছেন, তিনি সবসময়ে পানিতের থেকে অনেক দূরে থাকেন। যতক্ষন না প্রয়োজন হয়, স্নান থেকে নিজেকে বিরত রাখেন। কিন্তু বৃষ্টি হলে বা বর্ষাকালে ভীষন সমস্যা হয় তার। অ্যাবি জানিয়েছেন, তাঁর এই সমস্যা প্রথম শুরু হয় ২০১৮ সাল থেকে। প্রথমে চিকিৎসকরা ভেবেছিলেন কোনও শ্যাম্পু বা সাবান থেকে এই সমস্যা হচ্ছে ত্বকে। কোনও ধরনের স্কিনের রোগ। সেই অনুযায়ী চিকিৎসাও হয়। কিন্তু সমাধান মেলেনি অনেক ওষুধ খাওয়ার পরেও। দীর্ঘ চিকিৎসার পরে তাঁর এই রোগ চিহ্নিত হয়েছে।
সূত্র: মিরর ইউকে, নিউজ ১৮