আফগানিস্তানে ভূমিকম্পে ধসে পড়া দালানের ভগ্নস্তূপের সামনে দাঁড়ানো তিন বছরের এক শিশুর ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
টুইটারে ছবিটি পোস্ট করেন আফগান সাংবাদিক সায়েদ যিয়ারমাল হাশেমি। ছবিটি পোস্ট করার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারকারীরা হৃদয়গ্রাহী মন্তব্য করেন। এ সময় অনেকে সাহায্যও পাঠাতে চান। খবর জিও নিউজের।
হাশেমি ৫ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সাহায্য তোলা শুরু করেছেন। ভয়াবহ এ ভূমিকম্পে হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যান। এ ভয়াবহতা এত তীব্র ছিল যে, ২০ মাইল দূরে পাকিস্তানেও তা অনুভূত হয়।
শিশুর ছবিটি ৮২ হাজার বার রিটুইট করা হয়েছে এবং ৪৫৯,০০০ জন লাইক দিয়েছেন।
ভূমিকম্পের এই দুঃসময়ে সাহায্যের জন্য তালেবান সরকার ইরান, পাকিস্তান ও ভারতের কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছে।
আফগানিস্তানের পূর্বাঞ্চল পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে। ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ধ্বংসের নগরীতে পরিণত হয়েছে খোস্ত প্রদেশ।
গত কয়েক দিনে ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নতুন করে জীবন গড়ার লড়াই করছেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মানুষ। তবে, সমস্যা দেখা দিয়েছে পাহাড়ি অঞ্চলগুলোতে। নেই বিদ্যুৎ, পানি ও খাবার। এখনো অনেক জায়গায় পৌঁছায়নি সহায়তাও।
স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, আমার পরিবারের চারজন মারা গেছে। আহত হয়েছে আরও দুজন। আমাদের থাকার কোনো জায়গা নেই। খাবার নেই। সবাই অনেক কষ্টে আছে।
এরই মধ্যে বিভিন্ন দেশ থেকে সহায়তা আসতে শুরু করেছে দেশটিতে। অনেক দেশও নতুন করে আফগানিস্তানে সহায়তা পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তুদের তালিকা করার কাজ করছে স্থানীয় প্রশাসন।
ভূমিকম্প বিধ্বস্ত আফগানিস্তানে ৭৫ লাখ মার্কিন ডলার মূল্যের ত্রাণ পাঠাবে চীন। শনিবার (২৫ জুন) চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ ঘোষণা করা হয়। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়, মানবিক ত্রাণের মধ্যে তাঁবু, তোয়ালে, বিছানা ও নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য সমাগ্রী থাকবে।
গত বছর আগাস্টে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সরকারকে উৎখাত করে কাবুল দখল করে তালেবান। তালেবান ক্ষমতায় আসার পর দেশটিতে ত্রাণ কার্যক্রম ও বরাদ্দ প্রায় বন্ধ হয়ে যায়।
এদিকে, ভয়াবহ এই দুর্যোগ মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে আরও ত্রাণসহায়তা চেয়েছে তালেবান সরকার। একই সঙ্গে, দেশটির ওপর আরোপিত সব নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানানো হয়েছে।
তালেবান সরকারের একজন মুখপাত্র বলেন, ২০ বছর পর এমন ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি আমরা। সবার কাছেই সাহায্য, সহায়তা চাচ্ছি। একই সঙ্গে আমাদের নায্য অধিকার দাবি করছি। আমাদের সম্পদের ওপর থেকে এখনই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হোক।
দেশটির পূর্বাঞ্চলে গত সপ্তাহের ৬ দশমিক এক মাত্রার ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে সাড়ে ১১ শতাধিক। আহত হয়েছেন অন্তত ২ হাজার। ধ্বংস হয়ে গেছে ১০ হাজার ঘরবাড়ি।