ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই শেষে নির্বাচিত হলেন বামপন্থী প্রার্থী লুইজ ইনাসিও লুলা দা সিলভা। এ নির্বাচনি লড়াইয়ে তিনি পরাজিত করেছেন ব্রাজিলের বর্তমান প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারোকে।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, শেষ ধাপের ভোট গণনা শেষে লুলা দা সিলভা পেয়েছেন ৫০ দশমিক ৯ শতাংশ ভোট আর ৪৯ দশমিক ১ শতাংশ ভোট পেয়েছেন বলসোনারো।
এর আগে কারাগারে থাকায় ২০১৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি লুলা। রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোব্রাসের সঙ্গে চুক্তির বিনিময়ে ব্রাজিলের একটি নির্মাণ সংস্থার কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার দায়ে তাকে জেলে যেতে হয়। ২০০৩ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত দুই মেয়াদে দেশটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
নির্বাচনে জিতেই লুলা দা সিলভা বলেন, ব্রাজিলে গণতন্ত্র-শান্তি-সাম্যের সমাজ ফিরিয়ে আনতে কাজ করবেন তিনি। এর আগে ২ অক্টোবর ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। ওই ভোটে লুলা দা সিলভা পান ৪৮ দশমিক ৩ শতাংশ ভোট। বলসোনারো পান ৪৩ দশমিক ৩ শতাংশ।
তবে নিয়ম অনুযায়ী কোনো প্রার্থী ৫০ শতাংশ ভোট না পাওয়ায় নির্বাচন দ্বিতীয় দফায় গড়ায়।
লুলা প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় ব্রাজিলের বিভিন্ন শহরে উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে তার সমর্থকরা। পথে পথে আনন্দ মিছিল করতে দেখা যায় সাধারণ মানুষকেও।
লুলা দা সিলভা ও বলসোনারো দুজন দুই মেরুর রাজনীতিবিদ হিসেবে পরিচিত। লুলা দা সিলভা বামপন্থী রাজনীতিবিদ আর বলসোনারোকে কট্টর ডানপন্থী বলে মনে করা হয়। বলসোনারো আগে সেনাবাহিনীতে ক্যাপ্টেন ছিলেন।
সবকিছু ঠিক থাকলে ২০২৩ এর জানুয়ারিতে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশ ব্রাজিলের রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব নেবেন লুলা। তবে তাঁকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। নতুন প্রেসিডেন্টের সামনে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ করোনা-পরবর্তী সময়ে বিপর্যস্ত অর্থনীতির গতি ফেরানো, নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট লাঘব করা।
নির্বাচনে জয় পাওয়ার পরপরই লুলা দা সিলভাকে অভিনন্দন জানান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনসহ বিশ্বনেতারা। রয়টার্স লিখেছে, কলম্বিয়া ও চিলির নির্বাচনে বামপন্থিরা ঐতিহাসিক জয় পাওয়ার পর লুলার জয়ের মধ্য দিয়ে লাতিন আমেরিকায় একটি নতুন ‘গোলাপি জোয়ার’ আরও দৃঢ় হল।