আজ বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস। সারাবিশ্বের মতো বাংলাদেশেও জনসচেতনতার লক্ষ্যে দিবসটি পালিত হচ্ছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘আগামীতে নিজেকে সুরক্ষায় ডায়াবেটিসকে জানুন।’ অর্থাৎ ডায়াবেটিস সম্পর্কে ভালোভাবে জানতে পারলে ও সচেতন হলে একে প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত কয়েক দশকে সারা বিশ্বে ডায়াবেটিসে আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। ২০২১ সালে বিশ্বে ৫৩ কোটি ৭ লক্ষ মানুষ বা প্রতি ১০ জনে ১ জন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ছিলেন।
ডায়াবেটিস দু’প্রকার। টাইপ ১ ডায়াবেটিস যা শরীরে ইনসুলিনের ঘাটতির ফলে হয়ে থাকে। আর টাইপ ২ ডায়াবেটিস যা শরীরে ইনসুলিনের অকার্যকারিতার কারণে হয়ে থাকে। ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শারীরিক অসুস্থতা বাড়িয়ে তোলে। এই রোগ সম্পর্কে সময় মতো সচেতন হতে পারলে দীর্ঘদিন স্বাভাবিক জীবনযাপন সম্ভব। তাই ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি।
বাংলাদেশসহ জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত দেশে বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস পালিত হচ্ছে। ১৯৯১ সালে আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিক ফেডারেশন (আইডিএফ) ১৪ নভেম্বর তারিখটিকে ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে। বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির অনুরোধে বাংলাদেশ সরকার ১৪ নভেম্বর ‘বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস’ পালনের জন্য জাতিসংঘে প্রস্তাব করে। ২০০৬ সালের ২০ ডিসেম্বর জাতিসংঘে এ প্রস্তাব সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। আর ২০০৭ সাল থেকে পৃথিবীজুড়ে দিবসটি পালন করা শুরু হয়।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতির মতে, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত প্রতি ২ জনের মধ্যে ১ জন জানেন না তিনি আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের অধিকাংশই টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। দেশে ১ কোটি ৩০ লাখেরও বেশি মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। যাদের প্রায় অর্ধেকই নারী।
বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ১শ জনের মধ্যে ২৬ জন নারীই গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন, যাদের ৬৫ শতাংশই পরবর্তীকালে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন। যদিও পরিকল্পিত গর্ভধারণ ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখলে টাইপ-২ ডায়াবেটিস অনেকাংশেই প্রতিরোধ করা সম্ভব।
বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। দিবসটি উপলক্ষে বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ও দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। এছাড়া দেশব্যাপী ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতামূলক পোস্টার, লিফলেট বিতরণ করা হবে।