রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বেঁচে আছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির জেলেনস্কি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমি নিশ্চিত নই যে, তিনি (পুতিন) আদৌ বেঁচে আছেন কি না।’
বৃহস্পতিবার (১৯ জানুয়ারি) সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের বৈঠকে এমন মন্তব্য করেন জেলেনস্কি।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম জানায়, সুইজারল্যান্ডের ডাভোস শহরে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামে (ডব্লিউইএফ) মূল অনুষ্ঠানের ফাঁকে এক আয়োজনে জেলেনস্কি যোগ দিলে সেখানে ‘কবে শান্তি আলোচনা শুরু হবে’ এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি পুতিনের বেঁচে থাকা নিয়ে সন্দেহের কথা জানান। ইতিমধ্যে জেলেনস্কির এই বক্তব্যের ভিডিও টুইটারে ছড়িয়ে পড়েছে।
জেলেনস্কি বলেন, ‘আজ আমি আসলে বুঝতে পারছি না, কার সঙ্গে কথা বলব, কোন বিষয়ে কথা বলব। আমি আসলে নিশ্চিত নই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট, যিনি মাঝেমধ্যে সবুজ পর্দার সামনে হাজির হন, তিনি আসল কি না। আমি বুঝতে পারি না তিনি বেঁচে আছেন কি না, তিনি সব সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন কি না, নাকি অন্য কেউ নিচ্ছে।’
হতাশা প্রকাশ করে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমার মাথায় আসে না কীভাবে আপনারা (রাশিয়া) ইউরোপের নেতাদের একটি বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পরদিনই ইউক্রেনে পুরোদমে আগ্রাসন শুরু করতে পারেন। আমি আসলে বুঝতেই পারছি না কার সঙ্গে আমরা কাজ করছি। আমরা যখন শান্তি আলোচনার কথা বলি, আমি বুঝি না কার সঙ্গে এই আলোচনা করব।’
এদিকে জেলেনস্কির এমন বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পর কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ। তিনি বলেন, “জেলেনস্কির কাছে রাশিয়া ও পুতিন যে ‘বড় সমস্যা’ তা আবার স্পষ্ট হয়ে গেল। তিনি চান রাশিয়া ও পুতিনের অস্তিত্ব মুছে যাক। তবে তিনি যত তাড়াতাড়ি বুঝতে পারবেন রাশিয়ার অস্তিত্ব আছে এবং থাকবে, ইউক্রেনের পক্ষে ততই মঙ্গল হবে।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, পুতিনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি ইঙ্গিত করেই হয়তো জেলেনস্কি ওই মন্তব্য করেছেন বলে মনে করা হয়। কারণ, গত কয়েক সপ্তাহে সরকারি কোনো অনুষ্ঠানে অংশ নেননি রুশ প্রেসিডেন্ট। এমনকি গত ডিসেম্বরে বার্ষিক সংবাদ সম্মেলনও বাতিল করেন তিনি।
এর আগে গত বছর ডিসেম্বরের শুরুর দিকে মার্কিন এক সংবাদমাধ্যম দাবি করেছিল পুতিন গুরুতর অসুস্থ। অসুস্থ অবস্থায় বাসভবনের সিঁড়ি থেকে পড়ে রুশ প্রেসিডেন্ট জখম হয়েছেন বলেও ওই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ইউক্রেনে সেনা অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যকার এ যুদ্ধ কবে শেষ হবে তা কেউই বলতে পারছে না।